Skip to main content

কে গাণিতিক হিসাবে এগিয়ে ? সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাসী ও সৃষ্টিকর্তায় অবিশ্বাসীর মধ্যে !

কাল্পনিক দুইটি নাম (রাহি, মাশা) দিয়ে একটি অংক বুঝার চেষ্টা করি যেখানে আমরা বুঝতে পারব সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাসী ও সৃষ্টিকর্তায় অবিশ্বাসীর মধ্যে কে বেশি লাভবানঃ

ধরি,
মাশা = সৃষ্টিকর্তায় অবিশ্বাসী
রাহি = সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাসী
মাশার স্ত্রীর নাম   = মাহি
রাহির স্ত্রীর নাম   = রানু

বি. দ্রঃ রাহি ও মাশা একটি কোম্পানিতে প্রায় একই বয়সে (ধরি, ২৫ বছর বয়সে) একই সাথে খুব ছোট পোস্টে যোগদান  করে (কারণ তাদের পড়াশুনা খুবই কম ছিল) এবং তাদের বেতন সমান। পড়াশুনা খুবই কম থাকার কারণে তাদের বছরের পর বছর কাজ করার পরেও কোন প্রমোশন হচ্ছিল না। সৃষ্টিকর্তাকে অবিশ্বাস করার ফলে কোন ভয় না করে মাশা চাকরির পাশাপাশি অল্প কিছু টাকা দিয়ে সুদের ব‍্যবসা সহ লোক ঠকানোর কাজ শুরু করল এবং এই অবৈধ ব‍্যবসা থেকে আস্তে আস্তে লাভও হতে শুরু করল।

অপরদিকে, সৃষ্টিকর্তাকে বিশ্বাস করার কারণে রাহি চাকরির পাশাপাশি নিজে কষ্ট করে হলেও গরিবদের সাহায্য করত।
রানু ও মাহি বান্ধবী। হঠাৎ তারা কি মনে করে একটি সিদ্ধান্তে আসল। সিদ্ধান্তটি হল, যদি বেঁচে থাকে জীবনের শেষ পর্যায়ে  তারা যাচাই করবে তাদের স্বামীদের মধ‍্যে কার ক্রেডিট বেশি।
প্রায় ২৫ বছর পর হঠাৎ করে রানু ও মাহির আবার দেখা হয়ে গেল। রানু একটু কষ্ট পেল এই কারণে যে মাহি এখন অনেক টাকার  মালিক। ত যাই হোক এবার কাজের কথায় আসি-

📝 অংকঃ

ধরি,
💭 চাকরি করে ১ বছরে অর্জন = ১০ পয়েন্ট
💭 অবৈধ ব‍্যবসা করে ১ বছরে অর্জন = ১০ পয়েন্ট

🍀 মাশা ২৫ বছরে চাকরিতে যোগদান করে ৭০ বছরে মারা গেলে তার চাকরির বয়স হয়
= ৭০ বছর - ২৫ বছর
= ৪৫ বছর
মাশা ১ বছরে দুনিয়ায় অর্জন করল
= চাকরি করে অর্জন (১০ পয়েন্ট)+ অবৈধ ব‍্যবসা করে অর্জন (১০ পয়েন্ট)
= ২০ পয়েন্ট
মাশা 45 বছরে দুনিয়ায় অর্জন করল
= চাকরি করে অর্জন (৪৫ × ১০ পয়েন্ট)+ অবৈধ ব‍্যবসা করে অর্জন (৪৫ × ১০ পয়েন্ট)
= (৪৫ × ১০ পয়েন্ট) + (৪৫ × ১০ পয়েন্ট)
= ৪৫০ পয়েন্ট + ৪৫০ পয়েন্ট
= ৯০০ পয়েন্ট

🍀 আবার, রাহি ২৫ বছরে চাকরিতে যোগদান করে ৫৮ বছরে মারা গেলে তার চাকরির বয়স হয়
= ৫৮ বছর - ২৫ বছর
= ৩৩ বছর
রাহি ১ বছরে দুনিয়ায় অর্জন করল
= চাকরি করে অর্জন (১০ পয়েন্ট)
= ১০ পয়েন্ট
রাহি ৩৩ বছরে দুনিয়ায় অর্জন করল
= চাকরি করে অর্জন (৩৩ × ১০ পয়েন্ট)
= ৩৩ × ১০ পয়েন্ট
= ৩৩০ পয়েন্ট

🌿 সৃষ্টিকর্তা অবিশ্বাসীদের তথ‍্যমতেঃ

সৃষ্টিকর্তা অবিশ্বাসীদের তথ‍্যমতে পরকাল বলতে কিছুই নেই অর্থাৎ এই ক্ষেত্রে পরকালে কোন পয়েন্ট নেই (০ পয়েন্ট )। তাই এই তথ‍্যমতে মাশা ও রাহির ইহকালের জন্য পরকালে কোন হিসাব দিতে হবে না।

মাশার ইহকাল ও পরকালে মোট অর্জন
=৯০০ পয়েন্ট(ইহকালে)+০ পয়েন্ট (পরকালে)
=৯০০ পয়েন্ট

রাহির ইহকাল ও পরকালে মোট অর্জন
=৩৩০ পয়েন্ট(ইহকালে)+০ পয়েন্ট (পরকালে)
=৩৩০ পয়েন্ট

🌿 সৃষ্টিকর্তা বিশ্বাসীদের তথ‍্যমতেঃ

সৃষ্টিকর্তা বিশ্বাসী দের তথ‍্যমতে পরকালে মাশার অনন্তকাল শাস্তি হবে এবং এর জন্য মাশার ইহকালের ৯০০ পয়েন্ট এর কোন মূল্য থাকবে না। অর্থাৎ মাশার ৯০০ পয়েন্ট(ইহকালে) = ০ পয়েন্ট হয়ে যাবে পরকালে।

মাশার ইহকাল ও পরকালে মোট অর্জন
= ৯০০ পয়েন্ট(ইহকালে)+অনন্তকাল শাস্তি  (পরকালে)
= ০ পয়েন্ট + অনন্তকাল শাস্তি
= অনন্তকাল শাস্তি

রাহির ইহকাল ও পরকালে মোট অর্জন
= ৩৩০ পয়েন্ট(ইহকালে)+ অগণিত পয়েন্ট (পরকালে)
= ৩৩০ পয়েন্ট + অগণিত পয়েন্ট
= অগণিত পয়েন্ট

অতএব, দেখা যাচ্ছে

সৃষ্টিকর্তা অবিশ্বাসীদের তথ‍্যমতেঃ
মাশা পেয়েছে = ৯০০ পয়েন্ট
রাহি পেয়েছে = ৩৩০ পয়েন্ট

সৃষ্টিকর্তা বিশ্বাসীদের তথ‍্যমতেঃ
মাশা পেয়েছে = অনন্তকাল শাস্তি
রাহি পেয়েছে = অগণিত পয়েন্ট

বিখ‍্যাত থিওরি সম্ভাব‍্যতার( probability ) ব‍্যাখ‍্যা অনুসারে বলা যায়, হয় পরকাল থাকবে , না হয় পরকাল থাকবে না।

❗condition 1:
যদি,
💭 সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব না থাকে মৃত্যুর পর
মাশা= হিসাব থেকে বেঁচে যাবে।
রাহি = হিসাব থেকে বেঁচে যাবে।

❗condition 2:
সম্ভাব‍্যতা( probability ) অনুসারে যদি,
💭 সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব থাকে মৃত্যুর পর মাশা = শাস্তি হবে অনন্ত কাল
রাফি = শান্তিতে থাকবে অনন্ত কাল ।

⏩ পরিশেষে বুঝা যাচ্ছে,

মাশার অবস্থান condition 1 এ ভাল (হিসাব থেকে বেঁচে গেছে) কিন্তু condition 2 তে খুবই খারাপ।

রাফির অবস্থান condition 1 এ ভাল (হিসাব থেকে বেঁচে গেছে) ও condition 2 তে খুবই ভাল।

🍀 সারমর্মঃ

সুতরাং লাভের দিক থেকে রাফি মাশা থেকে অনেক অনেক বেশি এগিয়ে অর্থাৎ উপরের এই সমীকরণ থেকে আমি এতক্ষণ কি বুঝাতে চেয়েছি আপনারা আশা করি আন্দাজ করতে পেরেছেন। সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাসীরা অবশ‍্যই মৃত‍্যুর পর লাভবান হবে যেখানে সৃষ্টিকর্তায় অবিশ্বাসীদের অবশ‍্যই মৃত‍্যুর পর অনন্তকাল আফসোস করতে হবে।
প্রিয় পাঠক, আপনারাই এখন সুক্ষভাবে চিন্তা করে বলুন আপনার সিদ্ধান্ত কি ?

Comments

Popular posts from this blog

কেন ! কেন ! মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সঃ) কে শিশু ধর্ষক বা শিশু কামী বলা যাবে না ! যাবে না !

আমরা যারা মুসলিম সবাই এই একটি কথা অবশ্যই বিশ্বাস করি সেটা হল পবিত্র কুরআনে যা বলা আছে তা একশত ভাগ সত্য। কিন্তু অবশ্যই কর্তব্য এমন একটি কাজ আছে যেটা করার সময় আমাদের  অনেকেরই হয় না আমাদের দৈনন্দিন ব‍্যস্ততার কারণে। আর সেই কাজটি হল পবিত্র কুরআনে যা বলা আছে তা বাস্তবিক জীবনে প্রয়োগ করা। পবিত্র কুরআন ও সহিহ হাদীস ঠিক মত না জানার কারণে আমরা অনেকেই বিভ্রান্তির শিকার হই কিছু মানুষের দ্বারা যারা পবিত্র কুরআন ও সহিহ হাদীস দিয়ে বিভ্রান্তিকর প্রশ্ন করে। কিন্তু দুঃখের বিষয় এই যে, আমরা সঠিকভাবে পবিত্র কুরআন ও সহিহ হাদীস না জানার কারণে এই বিভ্রান্তির শিকার হই। অনেক বিভ্রান্তিকর প্রশ্নগুলোর মধ‍্যে একটি স্পর্শকাতর প্রশ্ন যেটা ইনশাআল্লাহ আজকে আলোচনা করব। প্রশ্নঃ মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সঃ) কি শিশু ধর্ষক বা শিশু কামী ছিলেন ? উত্তরঃ মূল বক্তব্যঃ রাসূল (সা.) এর ইন্তেকালের সময় সাহাবীর সংখ্যা ছিল প্রায় এক লাখ চৌদ্দ হাজার। তাদের সব সময় রাসূল (সা.) এর কাছে থেকে তাঁর সকল কথা শুনা বা সকল কাজ দেখা সম্ভব ছিল না। তাই অধিকাংশ সাহাবীর জানা থাকা হাদীসের মধ্যে কিছু ছিল রাসূল (সা.) এর নিকট থেকে সরাসরি শুনা বা দে

ইসলাম দাসপ্রথাকে কিভাবে মানবিক করেছে

আমাদের মধ্যে বেশিরভাগ লোকেরই  ইসলামে দাস দাসী নিয়ে খারাপ ধারণা আছে আবার এমন অনেকে আছেন এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে মন থেকে জবাব দিতে পারি না এমনকি হুজুরের জবাবেও মনে শান্তি পাই না। এর ফলে আস্তে আস্তে অনেকেরই ইসলামের প্রতি বিশ্বাস উঠে যাচ্ছে। তারা ধৈর্য্য সহকারে এই লেখাটি পড়ার অনুরোধ রইল আশা করি এ বিষয়ে পরিস্কার ধারণা আসবে এবং inshAllah, অন্যকে বিভ্রান্ত থেকে বাঁচাতে পারবেন। ইসলাম দাস প্রথার প্রবর্তক নয়; খুব সম্ভবত সেই আদিম বর্বরতার যুগে দাস প্রথার উৎপত্তি হয়েছিল এবং তা লিখিত ইতিহাসের পুরোটা ব্যাপী বিশ্বের প্রধান প্রধান সভ্যতার বৈশিষ্ট্য ছিল। দাস প্রথা ব্যাবিলনিয়া এবং মেসোপটেমিয়াতেও প্রচলিত ছিল। খ্রিস্টান ধর্মের আবির্ভাবের পূর্বে প্রাচীন মিশর, গ্রীস ও রোমিও দাস প্রথা বিশেষ লক্ষনীয় ছিল। দাসত্ব (ইংরেজি: Slavery বা Thralldom) বলতে বোঝায় কোনো মানুষকে জোরপূর্বক শ্রম দিতে বাধ্য করা, এবং এক্ষেত্রে কোনো মানুষকে অন্য মানুষের অস্থাবর সম্পত্তি হিসেবে গণ্য করা হয়। সাধারণত দুই ভাবে দাস দাসী হয়। যেমনঃ ✅ একঃ অভাব, দুর্ভিক্ষ, নদী ভাঙন, পরিবারের উপার্জনকারী সদস্যের মৃত্যু প্রভৃতি দুর্যোগ কবলিত ব

About Me

My photo
সত্য কথা
I have an interest in writing about the real truth of Islam. Study: I have completed BSC Engineering.